সৌদি ফেরত প্রবাসী আসমা অবশেষে আত্নহত্যার মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়ে বিদায় নিলেন
জীবন যুদ্ধে নিজেকে নিজেই শেষ করে দিয়ে চলে গেলেন আসমা (১৯)। নিহতের বাড়ি সরাইলের কালিকচ্ছ ইউনিয়নের চানপুর গ্রামে৷ তার বাবার নাম দেওয়ান আলি। খুবই অভাব অনটনের মধেই তার পরিবারে বড় হয়েছেন। সুখ কপালে ছিলনা বলা যায়। গরীব হয়ে পড়ালেখাটাও ঠিকমতো করতে পারেন নি। মা বাবা সহ পরিবারের সবার মুখে হাসি ফোটাতে প্রথমে গার্মেন্টসে চাকরি নেন পরে পাড়ি জমান প্রবাস নামক কষ্টের কারখানায়। একটু সুখের আশায় প্রবাসে গিয়েও নির্যাতন ছাড়া কিছুই পান নি তিনি। বারবার অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
সৌদিতে নির্যাতিত হয়ে দেশে ফিরে আত্নহত্যা করেছেন আসমা |
কথা বলতে পারছেন না, নির্যাতনের চিত্র গুলো যেন তার ভিতরটা শেষ করে দিচ্ছে।
আসমার শারীরিক ও মানষিক অবস্থা খারাপ দেখে তার ভগ্নিপতি তাকে তার বাড়িতে নিয়ে যান। গত ২০ নভেম্বর সিলেট চলে যাওয়ার কথা বললে বোন আনোয়ারা রাজি হয়নি। রাতে ভগ্নিপতি কাজে তাই বোনকে চিপস্ আনতে দোকানে পাঠায় আসমা। সেই সুযোগে ঘরের দরজা জানালা লাগিয়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। বোন এসে দেখে ঘরের দরজা ভেতরের দিকে লাগানো। অনেক চেষ্টার পর পেছনের দরজা ভেঙ্গে দেখেন ফাঁসিতে ঝুলে আছে আসমা। তড়িঘড়ি করে রশি কাটলে আসমার নিথরদেহ মাটিতে পড়ে যায়। আসমাকে দ্রুত সরাইল হাসপাতালে নিয়ে যান হোসেন মিয়া। চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। পুলিশ আসমার লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। জীবন যুদ্ধে নিজেকে নিজেই হারিয়ে দিলেন তিনি।
নিহত আসমার মা রহিমা বেগম ও বোন আনোয়ারা বেগম বলেন, আমাদের ধারণা মূলত সৌদী আরবে অত্যাচার নির্যাতনে অতিষ্ঠ ছিল আসমার জীবন। যা সে সহ্য করতে পারছিল না। তাই জেল খেটে দেশে এসে মরার মত ছিল। অবশেষে আত্মহত্যা করেই প্রতিবাদ জানিয়েছে। আমরা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে আসমার লাশ ময়না তদন্ত ছাড়া দাফন করেছি।
সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহাদাত হোসেন টিটো বলেন, এটা আত্মহত্যা। প্রবাসে কিশোরী বড় ধরণের কোন আঘাত পেয়েছে নানা রকম শারীরিক নির্যাতনের মাধ্যমে । আবার দেশে আসার পর তার প্রবাস দূর্বিষহ জীবন নিয়ে আশেপাশের লোকজনের নানা ধরণের আপত্তিকর সমালোচনা। যা আসমা মেনে নিতে পারেনি। তাই আত্নহত্যা পথ বেছে নিয়েছেন।
No comments