সিঙ্গাপুর সরকার প্রবাসীদের প্রতিদিন বিনামূল্যে খাবার দিয়ে ইতিহাস গড়েছেন। প্রতিটি কর্মীর দরজায় খাবার যাচ্ছে।

সিঙ্গাপুরে প্রবাসীদের বিনামূল্যে খাবার দিচ্ছেন সরকার     

বিশ্বের উল্লেখযোগ্য উন্নত দেশগুলোর একটি হল সিঙ্গাপুর। দেশটি অত্যন্ত সুশীল, সুশৃঙ্খল ও পরিস্কার পরিচ্ছন্ন হিসেবে সারাবিশ্বেই সমাদৃত। সিঙ্গাপুরে সর্বশেষ শুমারী অনুযায়ী জনসংখ্যা প্রায় ৫৭ লাখ।
অন্যান্য দেশের মত সিঙ্গাপুরও করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে পারেনি। দেশটির সকল

প্রবেশ পথগুলোতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা জোরদার করার পরও করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের শিকার হয়েছে জনগণ। তবে প্রথম দিকে হাতে গোনা কয়েকজন হলেও দেশটির অভিবাসীদের বাসস্থান কয়েকটি ডরমিটরি বা হোস্টেলে হঠাৎই আক্রান্তের হার বেড়ে বর্তমানে ৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার জনগণের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সার্কিট ব্রেকার ঘোষণা করেছে। কিন্তু আক্রান্ত ডরমিটরিতে বসবাসকারী অভিবাসী কর্মীদের আক্রান্ত হওয়ার খবরই আসছে প্রতিদিন। ডরমিটরিগুলোতে বিপুলপরিমাণে

 আক্রান্তের মূল কারণ হচ্ছে ঘনবসতি ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। ডরমিটরিতে আলাদাভাবে বা সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে বসবাস অসম্ভব তাই একজন আক্রান্ত হওয়ার ফলে হাজার অভিবাসী কোভিড-১৯ এর সংক্রমণের শিকার হয়েছেন। তবে সিঙ্গাপুর সরকার সমস্ত আক্রান্ত অভিবাসীদের চিকিৎসা বাসস্থান বেতন সব কিছুতেই নজর দিয়েছেন। মূলত কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে ডরমিটরি গুলোর এই অবস্থা হয়েছে। সিঙ্গাপুর সরকারও যথেষ্ট আন্তরিকতা আর নমনীয় আচরণ প্রকাশ করছেন।

সিঙ্গাপুরে অতি জরুরি সেবাগুলো ছাড়া বর্তমানে প্রায় সবকিছুই বন্ধ।  অধিকাংশ মানুষই ঘরে বসে কাটাচ্ছেন এখানে। সার্কিট ব্রেকারের মাধ্যমে প্রায় সব কিছু বন্ধ ঘোষনা করেছে সিঙ্গাপুর সরকার।
তবে সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশীরা অস্বাভাবিকভাবে আক্রান্তের কারণে সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশীদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও আন্তরিক হয়ে উঠেছেন সিঙ্গাপুরের সকল বড় বড় ব্যক্তিবর্গ শুধুমাত্র বাংলাদেশের জনগণকে ধন্যবাদ ও দুঃখ প্রকাশ করে সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে ভিডিও বার্তা দিচ্ছেন।

সিঙ্গাপুর সরকার এই করুন পরিস্থিতিতে ৩টি যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটিতে অবস্থান করা প্রতিটি মানুষের জন্য। এখানে কে সিঙ্গাপুরিয়ান কে মালয়েশিয়ান বা কে ইন্ডিয়ান, বা বাংলাদেশী সেটা দেখা হচ্ছেনা। গনহারে সবার সুষম বন্টনের মাধ্যমে এই তিনটি বিষয় তদারকি করা হচ্ছে।
★বেতন
★খাদ্য
★সুচিকিৎসা

অভিবাসী বা স্থানীয়দের কাজ বন্ধ থাকলেও তারা মাসিক নূন্যতম বেতন পেয়ে যাবে। প্রতিবেলার খাবার সরবারাহের ব্যবস্থা করা সহ কেউ আক্রান্ত হলে তার সর্বোচ্চ চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। এদিকে ডরমিটরি গুলো থেকে সুস্থ অভিবাসী কর্মীদের সরিয়ে নিরাপদ বাসস্থান নিশ্চিত করা হচ্ছে।

সিঙ্গাপুর এর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী  মিঃ লি সিয়েন লুং- (Mr. Lee Hsien Loong) এর দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ৩টি প্রতিশ্রুতি ই অক্ষরে পালন করে যাচ্ছেন। তার এই এই পদক্ষেপের প্রশংসা করছেন সমস্ত অভিবাসী কর্মীদের কমিউনিটি ও ও দেশের জনগণের স্থানীয় কমিউনিটিগুলো। বর্তমানে এমন মহান ও যুগান্তকারী পদক্ষেপ এর ফলে সবার মুখে তার প্রশংসা শুনা যাচ্ছে। তিনি অভিবাসী কর্মীদের চিকিৎসার দায়িত্ব বিনামূল্যে দিয়ে যাচ্ছেন যা কোটি টাকার চেয়ে বেশি।  Mr.Lee Hsien Loong এমনই

 এক মহত রাষ্ট্র-নায়কের নাম। যিনি নিজেই উনার ব্যক্তিগত ফেসবুক ভিডিওতে আমাদের বাংলাদেশের জন্য, বাংলাদেশিদের জন্য আলাদাভাবে কথা বলতে এসে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন বাংলাদেশিদের জন্য। সিঙ্গাপুরের সাথে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য কোন বানিজ্যিক সম্পর্ক নেই বললেই চলে। শুধুমাত্র অভিবাসী কর্মী নেয়ার মাধ্যমেই এই সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।

No comments

Theme images by Dizzo. Powered by Blogger.