অবৈধ অভিবাসীদের দেশে ফেরত যাওয়ার বিষয়ে পুত্রাজায়ায় জরূরী বৈঠক, দূর্ভোগে আছেন অবৈধ অভিবাসীগন

দালাল আর মধ্যসত্বভুগিদের নানাবিধ হয়রানি, টিকেটের আকাশচুম্বী দাম ও ট্রাভেল পাসের বিড়ম্বনায় নাজেহাল অবস্থা নিরীহ বাংলাদেশিদের। গত ১লা আগস্ট থেকে মালয়েশিয়া সরকার অবৈধ অভিবাসীদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে "ব্যাক ফর গুড" নামে কর্মসূচি চালু করা সত্বেও এইসব জটিলতা আর হয়রানির কারণে দেশে ফিরে যেতে পারছেন না।

স্পেশাল পাস নিতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষারত প্রবাসীগন

আগামী ৩১ ডিসেম্বরের ভিতরে দেশে না ফিরতে পারলে কঠিন সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে তাদের। এ সময়ের মধ্যে ধরপাকড়সহ ইমিগ্রেশনের অভিযান না করতে এবং ব্যাক ফর গুডের কার্যক্রম সহজীকরণের লক্ষ্যে ইমিগ্রেশনের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের সংশ্লিষ্টরা এক জরুরি বৈঠকে বসেছেন। আজ সকাল ১০টায় পুত্রাজায়ায় বসে এই জরুরি বৈঠক। তবে এখন পর্যন্ত বিস্তারিত জানা সম্ভব হয়নি।
মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগের এমন ঘোষণায় বিপাকে পড়েছেন মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত অবৈধ প্রবাসীগন। এই কর্মসূচি চলমান থাকলেও প্রতিদিনই চলছে ইমিগ্রেশন পুলিশ সহ বিভিন্ন বাহিনীর যৌথ অভিযান। "মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগের ১ জানুয়ারি থেকে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত পরিচালিত ১৫ হাজার ৯৯৬ অভিযানের মাধ্যমে মোট ৪৭ হাজার ৯৩ অবৈধ অভিবাসীদের আটক করা হয়েছে"

মালয়েশিয়ার উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাতুক মোহাম্মদ আজিস জামান বলেছেন, বিদেশিরা যেসব জায়গায় অবৈধভাবে বসবাস করার বিভিন্ন তথ্য ও গোয়েন্দা সংস্থার অনুসন্ধানের ভিত্তিতে বিভিন্ন যৌথ অভিযান পরিচালনা করে।
তিনি জানান বিদেশিরা যাতে করে আইন মেনে চলে ও অবৈধ হয়ে যাওয়া বা কোম্পানি থেকে পালিয়ে যেন না যায় সেই লক্ষ্যেই এই অপারেসি দেয়া হচ্ছে।
মোহাম্মদ আজিস বলেন, মন্ত্রণালয় বর্তমানে প্রশাসনকে শক্তিশালীকরণ এবং বিদ্যমান প্রয়োগকারী সংস্থার বিভিন্ন ব্যবস্থার উন্নয়নের পদক্ষেপ হিসেবে অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা পালন করার বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
এদিকে, ব্যাক ফর গুড কর্মসূচির সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কুয়ালালামপুর-ঢাকা রুটে সবকটি বিমানের টিকিটের দাম পাঁচগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে কুয়ালালামপুর-ঢাকা রুটে যেখানে ৪০০ রিংগিতে টিকিট পাওয়া যেত, এ কর্মসূচির শেষ দিকে এসে সেটা বেড়ে হয়েছে ১৮শ থেকে ১৯০০ পর্যন্ত। তবুও সাধারণ প্রবাসীরা টিকেট এর নাগাল পাচ্ছেন না।

"এমন অভিযোগের ভিত্তিতে গতকাল মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মহ. শহীদুল ইসলাম বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্সসহ সবকটি বিমানের সংশ্লিষ্ট কর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং কম মূল্যে টিকিট বিক্রি ও অতিরিক্ত ফ্লাইট বাড়িয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে সংশিষ্টদের আহ্বান জানিয়েছেন"

অন্যদিকে দেশে ফিরতে প্রতিদিন মালয়েশিয়া অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে ট্রাভেল পাস সংগ্রহ করতে ভিড় করছেন অবৈধ বাংলাদেশিরা। দূতাবাসে ট্রাভেল পারমিট (টিপি) ইস্যুতে কঠোর নজরদারির পরও থেমে নেই দালালদের দৌরাত্ম্য। কাউকে ট্রাভেল পাসের জন্য অর্থ দিয়ে থাকলে এবং প্রতারিত হলে তথ্য ও প্রমাণাদিসহ হাইকমিশনে যোগাযোগ করতে বলা হলেও অবৈধ বাংলাদেশিরা ট্রাভেল পাস পেতে পদে পদে হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বলে বারবার অভিযোগ উঠলেও কোন প্রতিকার মিলেনি।

তবে হাইকমিশন থেকে দালালদের মাধ্যমে কোন প্রকার লেনদেন না করার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।

No comments

Theme images by Dizzo. Powered by Blogger.