স্ত্রীর সাথে ফোনে কথা বলতে বলতে হার্ট অ্যাটাকে মারা গেলেন মালয়েশিয়া প্রবাসী। অভিবাসী কন্ঠ।

মৃত মোঃ সোহেল  

স্ত্রীর সাথে কথা বলতে বলতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে বসবাসকারী একজন প্রবাসী বাংলাদেশী। গতকাল মোঃ সোহেল (৪৩) নামের ঐ প্রবাসী রাত ১২টায় বুকিত বিনতাং এর একটি হসপিটালে মারা যান। প্রবাসী মোঃ সোহেল বাহ্মনবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের ধাতুর পহেলা গ্রামের মরহুম ইয়াসিন মাস্টারের বড় ছেলে। জীবীকার তাগিদে সোহেল বেশ

কয়েক বছর ধরেই মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছিলেন। মালয়েশিয়ায়  একটি রেস্টুরেন্টে কাজ করতেন তিনি। তার কোন বৈধ ভিসা ছিল না। গ্রামের বাড়িতে তার স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে বলে জানা গেছে। তার রুমমেট ও তার সঙ্গে থাকা এলাকার লোকজন এর লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তিনি ঘটনার দিন তার কর্মস্থলে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে

তখন তার কোম্পানির গাড়ি দিয়ে তার বাসায় পৌছে দেওয়া হয়। বাসায় যাওয়ার পর মোবাইল ফোনে তার স্ত্রীর সাথে অনেক্ক্ষণ যাবৎ কথা বলতে বলতে রাত১১টক ৩০ মিনিটের দিকে হঠাৎ মেঝেতে ঢলে পড়েন সাথে সাথে তার সহকর্মী ও রুমমেটরা অজ্ঞান অবস্থায় তাকে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান। তার এই মর্মান্তিক মৃত্যুর সংবাদ প্রবাসী মহল ও তার গ্রামের বাড়িতে জানাজানি হলে সবার মাঝে শোকের মাতম শুরু হয়।

তার রুমমেটরা আরও জানিয়েছেন যে, সোহেল ভিসার জন্য পরিচিত এক দালালের কাছে মোটা অংকের টাকা দিয়েও ভিসা করতে পারেননি। সোহেলের পিতা মরহুম ইয়াসিন মাস্টার জীবিত  থাকা অবস্থায় অসুস্থ হওয়ার পর সোহেলের বিরুদ্ধে আর্থিক সহযোগিতা দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছিলেন যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছিল। এসব ঘটনার পর থেকে সোহেল চিন্তায় পড়ে যান।

এদিকে মালয়েশিয়ায় অবৈধ কর্মী হিসাবে পালিয়ে পালিয়ে থাকা অবস্থায় পারিবারিক টানাপোড়েন ও  মানষিক চাপে সোহেলের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য দিন দিন খারাপ হতে থাকে। ঠিকমতো খাওয়া দাওয়া করতে পারতেন না এবং নিঃসঙ্গ জীবন যাপন শুরু করেন।

জানা গেছে তার পিতাকে ভরণপোষণ না দেওয়ার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলাও করা হয়েছিল। সকলেই ধারণা করছেন যে,  পারিবারিক টানাপোড়েন ও মানসিক চাপের কারণেই সোহেল অকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। সোহেলের লাশ দ্রুত দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা এসোসিয়েশন ও মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশন যৌথভাবে কাজ করছে বলে জানা গেছে।

No comments

Theme images by Dizzo. Powered by Blogger.