সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশী কর্মীরা সবকিছু ফ্রি পেয়েও অভিযোগ করা কতটুকু যুক্তিসঙ্গত??

সিঙ্গাপুরে চলমান সার্কিট ব্রেকার বা লকডাউন সময়ে সরকার শ্রমিকদের জন্য যা করছে তা বাংলাদেশের শ্রমবাজারের কোন দেশেই নেই, এমনকি উন্নত দেশগুলোর দিকে তাকালেও এমন দৃশ্য চোখে পড়েনা।

বিশেষ করে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশী আক্রান্তের পর থেকে সিঙ্গাপুর সরকার বাংলাদেশীদের প্রতি খুবই নমনীয় আচরণ প্রদর্শন করে আসছে। শ্রমিক আর কোম্পানিদের গাফিলতির ফলে ডরমিটরিতে আক্রান্তের কারণে সরকার পুরো দায়ভার নিজের ঘাড়ে নিয়েছেন। অতি  ঝুঁকিতে থাকা সকল শ্রমিকদের আলাদা করে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছে। তিনবেলা গরম খাবার, সাথে ফল বা ফলের জুস, গোসলের

সাবান, শ্যাম্পু, টুথপেস্ট, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, বাড়িতে কথা বলার জন্য ১০০ জিবি সিম কার্ড, চিকিৎসা , ঔষধ, চিকিৎসক, সকল প্রকার ডাক্তারী পরীক্ষা, মাস শেষে কাজ না করেও বেতন । আরব গালফের দেশগুলোর দিকে তাকালেই বুঝা যায়

 বাংলাদেশীদের দুরাবস্থার আর দুর্ভোগের চিত্র। সেই তুলনায় সিঙ্গাপুরের প্রবাসীরা বলতে গেলে সোনায় সোহাগা। সিঙ্গাপুর সরকারের তরফ থেকে আরও বলা হয়েছে যে অভিবাসী কর্মীদের স্থানীয় নাগরিকদের মতই সুবিধা দেয়া হবে। সরকারের কথা আর কাজের প্রমান পাওয়া যায় মুহুর্তেই যা বাংলাদেশী প্রবাসীরা অস্বীকার করতে পারবেনা।
আপনি বলতে পারেন ভাই খাবার যা দেয় সেটা আমাদের দেশি খাবারের মত স্বাদ হয় না, হওয়ার কথাও না। সারাবিশ্ব যখন এইরকম পরিস্থিতিতে হিমশিম খাচ্ছে, অর্থনৈতিক অবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে,

খাদ্যের সংকট দেয়া দিয়েছে সেখানে প্রতিদিন এই পরিমান খাবার পাওয়াটাও ভাগ্যের বিষয়। খাবারটা যে আমাদের দেশের বা আমাদের রান্না করা খাবারের মত হবে এমনটা কি সম্ভব কখনও?  প্রতিদিন প্রায় ১ লাখেরও বেশি কর্মীদের খাবার প্রস্তুত করে সবার দরজায় পৌঁছে দেয়া চারটি খানি কথা নয়। এদিকে প্রতিদিন কমপক্ষে ৫০০ থেকে ১১০০ জন নতুন আক্রান্ত রোগীদের নিয়েও প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় সহ সংশ্লিষ্ট সকলের মহা দুশ্চিন্তা।

শ্রমিকদের বন্টন করা খাবার গুলো অনেক মিল বা কিছু খাবার SATS Food তৈরী করে, এই SATS Food কোমম্পানির খাবার সিংগাপুর বিমানেও পরিবেশন করা হয়, বাংলাদেশী হিসেবে আমরা অনেকেই এই খাবার টা পছন্দ করি না। বাংলা স্বাদের খাবারই দিতে হবে? খাবার মান এবং খাবারের স্বাদ নিয়ে প্রশ্ন যারা তুলছেন তারা একবার চিন্তা করে দেখুন, আমরা কি বোঝাতে চাচ্ছি।

যেসব ক্যাটারিং সার্ভিস গুলো থেকে খাবার সরবারাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে তাদের খাবারের মান সবসময় ভালো হবেনা, খাবারের মান খারাপ হলেও এই মুহুর্তে সেটা ফেসবুকে না দিয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট সরাসরি অভিযোগ জানানো উচিত। ফেসবুকে  এভাবে ক্যাটারিং সার্ভিস এর দোষ তুলে ধরা হলে টা অনেকটাই অভিযোগ সরকারের উপর এসে পড়ে পাশাপাশি ফেসবুকে এইসব পোস্ট গুলো স্থানীয় নাগরিকদের চোখেও পড়ে। ইতিমধ্যেই এমন একটি পোস্টে স্থানীয় নাগরিকের কমেন্টে বিরুপ প্রতিক্রিয়া জানাতে দেখা গেছে৷ 

আরও পড়ুন 
👇
 বাংলাদেশী শ্রমিকদের এই ছবিটি পুরো মালয়েশিয়াতে ব্যাপক প্রশংসায় ভাসছে। বিস্তারিত পড়ুন
👇
সিঙ্গাপুর সরকার প্রবাসীদের প্রতিদিন বিনামূল্যে খাবার দিয়ে ইতিহাস গড়েছেন। প্রতিটি কর্মীর দরজায় খাবার যাচ্ছে।

যেহেতু এখন মহামারী দেখা দিয়েছে তাই আমাদের কে একটু ধৈর্য ধরতে হবে। বাংলাদেশী কর্মীদের কাজ নিয়ে সিংগাপুর সরকার প্রসংশা করে।
আমাদের এত এত কষ্টে অর্জিত সুনাম কে ছোট খাটো ব্যাপারে নষ্ট হতে দেয়া উচিত হবেনা। খাবারের মান নিয়ে এভাবে কথা বলাটা কতটুকু যুক্তিসঙ্গত তা উপরের আলোচনা পড়ে বুঝতে পেরেছেন আশা করি। লেখাটি কাউকে ছোট বা কারো বিরুদ্ধে নয়। আশা করি সহজভাবে নিবেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এভাবে পোস্ট দিলে সেদেশের লোকজনের চোখে পড়াটাই স্বাভাবিক। সুতরাং সরকারের এই মহান যুগান্তকারী পদক্ষেপের সমালোচনা না করে প্রশংসা করুন৷


অভিবাসী কন্ঠ, সবসময় প্রবাসীদের কথা বলে।

No comments

Theme images by Dizzo. Powered by Blogger.