মালয়েশিয়াতে ২টি বড় ধরনের বাংলাদেশী ভিসা ও পাসপোর্ট জালিয়াতি চক্র গ্রেফতার।
মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ গত ২০ এবং ২১ শে আগস্ট ধরে চালানো অভিযানে ২টি বড় ধরনের পাসপোর্ট ও ভিসা সিন্ডিকেটকে সফলভাবে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। এই অভিযানে ইমিগ্রেশন বিভাগের গোয়েন্দা টিম, বিশেষ অভিযান কর্মকর্তা এবং ইমিগ্রেশন বিভাগের অপারেশনস,
তদন্ত ক প্রসিকিউশন বিভাগের কর্মকর্তারা অংশ নিয়েছিলো। কুয়ালালামপুরের দানাউ ডেসা এলাকায় ইমিগ্রেশনের গোয়েন্দা, বিশেষ অভিযান ও বিশ্লেষণ বিভাগ ২১ জন কর্মকর্তা সাথে নিয়ে ২০ আগস্ট রাত ১০ টায় প্রথম অভিযানটি পরিচালনা করেন।
এই অভিযানে, এই সিন্ডিকেটের মূল মাস্টারমাইন্ডস দু'জন বাংলাদেশিসহ মোট আটজন বিদেশিকে আটক করা হয়েছিল। আটককৃতদের মধ্যে ৩ জন বাংলাদেশী মেয়ে, দুজন ইন্দোনেশিয়ান মেয়ে এবং একটি ইন্দোনেশিয়ান শিশু ছিল।
মোডাস অপারেন্ডি সিণ্ডিকেটটি কুয়ালালামপুরের আশেপাশের নির্মান সাইটগুলোতে অবৈধ বাংলাদেশিদের কাছ থেকে অবৈধ উপায়ে ভিসা সরবরাহ করে মোটা অংকের টাকা নেয়। তারা প্রতিটি আবেদনের জন্য সাড়ে ছয় হাজার রিঙ্গিত থেকে শুরু করে আট হাজার রিঙ্গিত পর্যন্ত নিয়ে থাকে এবং ভিসা নবায়ন করার সময় ২৫০০ রিঙ্গিত করে নিয়ে থাকে। পর্যালোচনায় দেখা গেছে তারা মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাথে নিবন্ধিত না হয়েও বিদেশি কর্মীদের এজেন্ট হিসেবে কাজ করে আসছিলো।
অভিযানের সময় অপরাধীরা অভিযানকে আরও দীর্ঘায়িত করতে চেয়েছিলো কারণ তারা পাসপোর্ট ও ভিসা গুলো লুকানোর চেষ্টা করেছিলো। পর বারান্দা থেকে ১৮টি পাসপোর্ট এবং ভিসা ব্যাগে ভরে ফেলে দেয়া হয়েছিল যা অপারেশন কর্মকর্তারা খুজে পেয়েছিলো।
পুরো অভিযানের ফল স্বরুপ, ইমিগ্রেশন বিভাগ ১৭৭ টি বিদেশি পাসপোর্ট, অর্থ প্রদানের রশিদ, নগদ চার হাজার রিঙ্গিত, দুই ইউনিট কম্পিউটার, দুই ইউনিট প্রিন্টার এবং বাংলাদেশীর কাছে একটি পেরাদুয়া আলজা গাড়ি জব্দ করেছে ইমিগ্রেশন বিভাগের কর্মকর্তারা। অভিযানে মাইইজি রিহায়ারিং আবেদনের বেশ কয়েকটি কপিও পাওয়া গেছে।
দ্বিতীয় অভিযানটি গত ২১ শে আগস্ট রাত ২টায় ইমিগ্রেশন বিভাগের অপারেশন, তদন্ত ও প্রসিকিউশন বিভাগের কর্মকর্তারা কুয়ালালামপুরের ভিস্তা সাউজানায় পরিচালনা করে।
অভিযানে দেখা যায়, ৩ জিন বাংলাদেশী ওয়ার্ক পারমিট এবং বাংলাদেশী পাসপোর্ট মুদ্রন কার্যক্রম চালাচ্ছিল। অভিযানের কর্মকর্তারা ৫৮ টি পাসপোর্ট রাইস কুকার ও অপ্রত্যাশিত জায়গায় থেকে উদ্ধার করা হয়েছে যা তারা লুকিয়ে রেখেছিল। এছাড়াও ইমিগ্রেশনের ছয়টি ভিসা স্টিকারও পাওয়া গেছে যেখানে ৫ টি ভিসা মুদ্রিত ছিল।
এই সমস্ত বিষয় লকডাউন চলাকালীন সময়ে অবৈধ অভিবাসীদের কাছে স্পেশাল পাস বিক্রয় এবং সাধারণ ওয়ার্ক পারমিট বিক্রয় ও জালিয়াতির কার্যকলাপ স্বীকার করেছে তারা এবং সকল লেনদেন অনলাইন ব্যাংকিং এর মাধ্যমে হয়েছে বলে বলা জানায় গ্রেফতারকৃত্রা।
সমস্ত আটককৃতদের তদন্ত ও ফলো-আপ পদক্ষেপের জন্য পুত্রজায়া ইমিগ্রেশন ডিটেনশন লকআপে রাখা হবে। সিন্ডিকেটের মাস্টারমাইন্ড সম্পর্কে তদন্ত করা হয়েছিল ইমিগ্রেশন আইন 1959/63 এর ধারা 55D এর অধীনে সরকারি কাগজপত্র জালিয়াতির জন্য দোষী সাব্যস্ত হলে তাদের ৩০,০০০ রিঙ্গিত এর চেয়ে কম জরিমানা করা হতে পারে এবং পাঁচ বছরের কম জেল হতে পারে এবং ৬টির বেশি রতান বা বেত্রাঘাত করে জরিমানা করা যেতে পারে। অন্য বিদেশীদের ইমিগ্রেশন আইন 1959/63, পাসপোর্ট আইন 1966 এবং ইমিগ্রেশন রেগুলেশন 1963 অনুযায়ী বিভিন্ন অপরাধের জন্য তদন্ত করা হচ্ছে।
No comments