বড় শ্রমবাজারগুলোর কয়েকটি দেশ অবৈধ কর্মীদের ফেরত পাঠিয়ে দিবে। বিপদে লক্ষ শ্রমিক, বিপদে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য শ্রমবাজারগুলোর কয়েকটি দেশ থেকে কর্মী ফিরিয়ে নিতে বিভিন্নভাবে কূটনৈতিক চাপ দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশের উপর। দেশগুলোতে অবস্থানরত অবৈধ বা বৈধ কাগজপত্র বিহীন যেসব বাংলাদেশীরা বিভিন্ন দেশের কারাগারে বন্দী আছে


তাদের ফিরিয়ে দেশে আনার জন্য কড়া নির্দেশ দিয়েছে বড় শ্রমবাজারের কয়েকটি রাষ্ট্র। আর এসব শ্রমিকদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠালে এক দিকে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত ও বিপদে পড়বে শ্রমিকরা অন্য দিকে বাংলাদেশও বড় ধরনের বিপদে পড়তে যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই কুয়েতে থাকা বৈধ কাগজপত্র বিহীন এবং কারাভোগকারী কর্মীদের ফেরত না নিলে বাংলাদেশের শ্রমবাজারকে ব্ল্যাকলিস্ট করা হবে বলে কড়া হুশিয়ারি দেয়া হয়েছে। তবে আরেকটি দুঃসংবাদ হচ্ছে, কুয়েত থাকা বৈধ অভিবাসী

কর্মীদের পরবর্তী ভিসা রিনিউ করা হবে না বলেও জানানো হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে অনেক বাংলাদেশীর ভিসা বাতিল হয়েও যেতে পারে বলে আশংকা করা হয়েছে। আজ (রবিবার ৫ই এপ্রিল) প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে এই বিষয় গুলো
 নিয়ে  জরুরিভাবে আন্তঃমন্ত্রণালয় মিটিংয়ের পর মাননীয় মন্ত্রি ইমরান আহমদ বলেন, কিছু দেশ থেকে আমাদের দেশের কর্মীদের ফিরিয়ে আনতে হাইকমিশনগুলোকে জানানোর পর মন্ত্রণালয়ের নিকট সেই প্রতিবেদন গুলো পাঠানো হয়েছে।

জনাব, ইমরান আহমদ বলেন, কুয়েত থেকে কারাগারে দন্ডপ্রাপ্ত ও অবস্থানকারী অবৈধদের দেশে ফেরত আনার বিষয়ে বিভিন্ন আলোচনা করা হয়েছে। এই কর্মীদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিতে কুয়েত সরকার তাদের নিজস্ব খরচে পাঠানোর সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। মিটিংয়ে সাংবাদিককের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেন, প্রায় বিভিন্ন দেশ থেকে আমাদের অভিবাসী কর্মীদের ফিরিয়ে আনার কঠোর আহ্বান জানানো হয়েছে। মন্ত্রী আরও এই বিষয়ে সরকারের এই ২ টি মন্ত্রণালয় খুব চাপের মধ্যে রয়েছে।

আরও পড়তে ক্লিক করুন👇

বাংলাদেশীদের জন্য দুঃসংবাদঃ কুয়ালালামপুরে সেলায়াং বাজারে রোহিঙ্গা আক্রান্তের খবর প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়,
👇
লকডাউনে জেলে পাঠানো হবে না, গ্রেফতার করেই শাস্তি দেবে পুলিশ, মন্ত্রী পর্যায়ের বিশেষ কমিটির আলোচনা। ঘোষণা আসছে শীঘ্রই
👇
প্রবাসীরা সাবধান!!! মালয়েশিয়াতে আক্রান্ত হতে পারে ৪০ হাজার, তালিকা করেছে মালয়েশিয়ার পুলিশ।

উক্ত বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, কুয়েত থেকে দন্ডপ্রাপ্ত ১৯০ জন অভিবাসী কর্মীকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিতে চাচ্ছে।
তবে তারা সেখানে কেন দন্ডিত হয়েছেন সেই ব্যাপারে তদন্ত ক্ক্রে দেখার জন্য কুয়েত হাইকমিশনার এর কাছে তালিকা চাওয়া হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন এসব কর্মীরা কি সেখানে কোন জঙ্গী সংগঠনের সাথে জড়িত ছিল কিনা তা চূড়ান্ত যাচাই করে দেশে ফেরত আনা হবে।

কুয়েতের সরকার আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছে। এই সময়ের মধ্যে কুয়েতে থাকা সমস্ত অবৈধ বা কাগজপত্র বিহীন কর্মীদের তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত যেতে বলেছে। সেখানে প্রায় কয়েক হাজার বাংলাদেশী অবৈধভাবে অবস্থান করছেন। এসব কর্মী বাংলাদেশ গ্রহন না করতে চাইলে বাংলাদেশের সাথে গুরুত্বপূর্ণ এই শ্রমবাজারটি কুয়েত সরকার বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়েছে।  শুধু তাই নয়, কুয়েত বৈধভাবে অবস্থানরত কর্মীদেরও ভিসা নবায়ন না করার হুশিয়ারি দেয়া হয়েছে।

মালদ্বীপ সরকার ইতিমধ্যেই দেশটিতে থাকা কাগজপত্র বিহীন কর্মীদের তাদের নিজস্ব অর্থায়নে ফেরত পাঠানোর কার্যক্রম শুরু করেছে।
যেখানে প্রায় ৩৮ হাজার অবৈধ অভিবাসী দেশের ফেরত আসার জন্য সংশ্লিষ্ট হাইকমিশনে নিবন্ধন করেছে।

মালদ্বীপের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন জানান, মালদ্বীপের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে আমার কথা হয়েছে তিনি আমাকে ফোন করে বলেছিলেন যে, অবৈধভাবে অবস্থানকারীদের দায়িত্ব নিতে পারবেন না তিনি তবে বৈধভাবে থাকা সকল কর্মীর পর্যাপ্ত সুবিধা নিশ্চিত করতে রাজি থাকলেও অবৈধদের দ্রুত দেশে পাঠানোর কথা বলেছেন তিনি।

বাহারাইন সরকারও ঠিক একই কার্যক্রম চালু করছে। দেশটির কারাগারে সাজাপ্রাপ্ত ৯০১ জন অভিবাসী কর্মীর সাজা মাফ করা হয় যার মধ্যে ২১৬ জন বাংলাদেশীর তালিকা পাওয়া গেছে বলে জানানো হয়। তবে বাহরাইন থেকে প্রায় ৩০ হাজারের মত অভিবাসী কর্মী দেশে ফেরত আসতে হতে পারে বলেও উল্লেখ করা হয়।

এদিকে মালয়েশিয়া, সৌদি আরব এবং ওমান থেকে এখানো কোন অফিসিয়াল বিবৃতি পাওয়া যায়নি সুতরাং এই দেশগুলো থেকে ফেরত পাঠানো হবে কিনা সেই বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা না হলেও কূটনৈতিক তৎপরতা অনুযায়ী অনেকটা অশনি সংকেত পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়।

No comments

Theme images by Dizzo. Powered by Blogger.